বঙ্গবন্ধুর বদৌলতে মামুনুল প্রাণে রক্ষা পাচ্ছেন
ড۔ সেলিম মাহমুদ
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশে যে ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান এবং আইনি ব্যবস্থা প্রণয়ন করেছিলেন, তার কারণেই মামুনুল হক ইসলামিক শরিয়া আইন অনুযায়ী ব্যভিচারের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড থেকে রক্ষা পাচ্ছেন। হেফাজতসহ কিছু উগ্রপন্থী ধর্মভিত্তিক সংগঠন বাংলাদেশে ইসলামী বিপ্লব সংঘটিত করে ইসলামিক শরিয়া আইনভিত্তিক শাসনব্যবস্থা কায়েম করার ঘোষণা দিয়ে আসছে।
ইসলামিক শরিয়া আইন বহাল থাকলে আজ ব্যভিচারের অপরাধে মামুনুল হকের মৃত্যুদণ্ড হতো। স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু বাস্তবিক কারণেই একটি ধর্মনিরপেক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন। রাষ্ট্রীয় আইনি ব্যবস্থার (লিগ্যাল সিস্টেম) শ্রেণীকরণ/ক্লাসিফিকেশন কয়েক রকমের। একটি মৌলিক শ্রেণীকরণ হচ্ছে, ধর্মভিত্তিক বা প্রাকৃতিক আইন ব্যবস্থা ( Divine Law or Natural Law) এবং মানবসৃষ্ট আইন (Positive Law) বা ধর্মনিরপেক্ষ আইনব্যবস্থা। ভারতীয় উপমহাদেশের কয়েকশ বছরের আইন ব্যবস্থাসমূহ পর্যালোচনা ক্রমে বাস্তবিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে জাতির পিতা মানবসৃষ্ট আইন বা পজিটিভ ল’ ভিত্তিক আইনব্যবস্থাকে (যা ধর্মনিরপেক্ষ আইনব্যবস্থা হিসেবেও পরিচিত) স্বাধীন বাংলাদেশের আইনব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণ করেন। জনগণের সার্বভৌমত্ব এবং জনগণের কল্যাণই এ আইন ব্যবস্থার মূলভিত্তি।
জাতির পিতা উপলব্ধি করেছিলেন, পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠী ধর্মের দোহাই দিয়েই আমাদের ওপর তাদের অন্যায়-অত্যাচার চাপিয়ে দিয়েছিল। ধর্মকেই তারা তাদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছিল। বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের সময় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এ বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এছাড়া, ব্রিটিশ শাসন-পূর্ববর্তী সময়ে মুঘল শাসনামলে ভারতবর্ষে যতটুকু ইসলামিক শরিয়া আইন চালু ছিল, সেটি নানা দিক থেকে ত্রুটিপূর্ণ ছিল। তাতে ইসলামের অনুশাসন বাস্তবায়িত হয়নি।
মধ্যযুগে ইউরোপে ধর্মভিত্তিক যে রাষ্ট্র ব্যবস্থা ছিল, সেটিও মানুষের কল্যাণের পরিবর্তে অকল্যাণেই ব্যবহার হয়েছে। আমাদের মতো আর্থ-সামাজিক-সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন দেশগুলোতে ইসলামিক অপরাধ আইন বা ‘ইসলামিক ক্রিমিনাল জাস্টিস’ বাস্তবিক অবস্থার কারণেই সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করা যায়নি। এসব কারণে জাতির পিতার নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশের গণপরিষদ ইসলামিক আইনকে বাংলাদেশে পার্সোনাল আইন ( Personal Law) হিসেবে গ্রহণ করেন। এই আইনের মাধ্যমে সম্পত্তির উত্তরাধিকার, বিবাহ, ভরণ-পোষণ, বিবাহ বিচ্ছেদ, দেন-মোহর, শিশুর অভিভাবকত্ব, দান, ট্রাস্ট ও ট্রাস্ট সম্পত্তি, ওয়াকফ সম্পর্কিত এবং অপরাপর ব্যক্তিগত বিষয়সমূহ ইসলামিক শরিয়া আইন অনুযায়ী নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। পৃথিবীর অনেক মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্রে এ ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে। জাতির পিতা এ দেশে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচারভিত্তিক যে শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করেছিলেন, সেটি ইসলামিক জুরিসপ্রুডেন্সের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
হেফাজতেসহ কিছু উগ্রপন্থী সংগঠনের নেতারা বাংলাদেশের সব ক্ষেত্রে শরিয়া আইন বাস্তবায়ন করতে চায়। এই লক্ষ্যে তারা এদেশে ইসলামী বিপ্লব সংঘটিত করতে চায়। মামুনুল হকসহ এসব মিথ্যাবাদী ও ভণ্ড ব্যক্তিদের মুখোশ উম্মোচিত হচ্ছে । নিজেরা ব্যক্তি জীবনে সব ধরনের অনৈতিক, অপরাধমূলক ও ইসলাম পরিপন্থী কাজ করছে, অথচ তারা ইসলাম ধর্মের নামে এদেশের ধর্মভীরু মানুষ ও কোমলমতি শিশুদের প্রতিনিয়ত ধর্মের ভয় দেখিয়ে প্রতারিত করছে। তারা সমাজে নিজেদের ইসলামের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থাপন করছে। কথায় কথায় তারা ধর্মকে বিক্রি করছে; শুধু নিজেদের স্বার্থে তারা সমাজে ধর্মান্ধতার বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে। মামুনুল হক যে কাজটি করেছে, এটি ইসলামিক শরিয়া আইন অনুযায়ী ব্যভিচার, যার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশেই এই ইসলামিক শরিয়া আইন চালু রয়েছে। অধিকাংশ দেশেই পাথর নিক্ষেপ করে ব্যভিচারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। জাতির পিতা সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে যদি Positive Law (জুরিসপ্রুডেন্সের ভাষায়) বা ধর্মনিরপেক্ষ আইন ব্যবস্থা চালু না করে ইসলামিক আইন চালু করতেন, তাহলে মামুনুল হককে ব্যভিচারের অপরাধে পাথর নিক্ষেপ করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হতো।
আবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যদি স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা না করতেন অর্থাৎ বাংলাদেশ যদি পাকিস্তানের অংশ হিসেবে থাকতো, যেটি মামুনুল হকের বাবাসহ বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী কিছু ব্যক্তি চেয়েছিল, তাহলে পাকিস্তানে পরবর্তীকালে জারিকৃত ও বর্তমানে প্রচলিত শরিয়াভিত্তিক আইন Hudood Ordinances বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হতো। এই Hudood প্যাকেজ আইনের আওতায় ১৯৭৯ সালে পাকিস্তানে The Offence of Zina (Enforcement Of Hudood) Ordinance (যা ‘জিনা অর্ডিন্যান্স’ হিসেবে বহুল পরিচিত) জারি করা হয়। এই আইনের ধারা ৫ অনুযায়ী কোন বিবাহিত মুসলিম ব্যভিচারের অপরাধ করলে তাকে জনসম্মুখে পাথর নিক্ষেপ করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার বিধান রয়েছে। অপরাধী অমুসলিম হলে তাকে জনসম্মুখে একশ বেত্রাঘাতের বিধান রয়েছে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ সৃষ্টি না করলে আজ এই আইনেই জনসম্মুখে পাথর নিক্ষেপ করে মামুনুল হকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হতো। এই মামুনুলরাই বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী; এরা এখনও পাকিস্তানের জন্য মায়াকান্না করে।
মামুনুল হকের ব্যভিচার প্রমাণিত। কারণ সে নিজেই ব্যভিচারের কথা স্বীকার করেছে। প্রথমত, তার সাথে সোনারগাঁয়ের রিসোর্টে থাকা নারীর পরিচয় হিসেবে লিখেছে তার নিজের স্ত্রীর নাম। ওই নারী তার স্ত্রী হলে ওই নারীর নামই রেজিস্টার খাতায় লিখতো। দ্বিতীয়ত, মামুনুল তার নিজের স্ত্রীকে টেলিফোনে বলেছিলেন, ওই নারী শহিদুলের স্ত্রী। স্ত্রীকে বলেছিলেন, কেবল পরিস্থিতির কারণে সে ওই নারীকে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী বলেছিলেন। তিনি তার স্ত্রীকে অনুরোধ করেছিলেন, সে যেন এই কথাই সবাইকে বলে। মামুনুল যদি তার সাথে হোটেলে থাকা ওই নারীকে সত্যিই বিয়ে করতো, তাহলে ওই বিশেষ পরিস্থিতিতে নিজেকে বাঁচানোর জন্য অবশ্যই তার স্ত্রীকে আসল ঘটনা বলতো। তৃতীয়ত, মামুনুলের বোন টেলিফোনে মামুনুলের স্ত্রীকে অনুরোধ করেছিল, সে যেন অন্য কাউকে তাদের শেখানো কথার বাইরে কথা না বলে। মামুনুলের স্ত্রীকে অনুরোধ করলো, সে যেন এটি বলে যে, মামুনুলের দ্বিতীয় বিয়ের কথা যে জানতো। তখন মামুনুলের স্ত্রী তার স্বামীর বোনকে জিজ্ঞেস করেছিল, মামুনুল আসলে বিয়ে করেছে কিনা। তার বোন তখন বলেছিল, বিয়ের কথা সত্যি নয়। মামুনুল কে বাঁচানোর জন্যই তারা এ কথা বলছেো; মামুনুলের স্ত্রী যেন এই নিয়ে কোন চিন্তা না করে। মামুনুলের স্ত্রীর কথোপকথন শুনে মনে হয়নি যে মামুনুল বা তার ভাইবোনেরা তার স্ত্রীর ভয়ে কোন কিছু লুকিয়ে রাখছে। বরং মনে হয়েছে, মামুনুলের স্ত্রী নিরীহ প্রকৃতির এক সহজ সরল নারী, যার ওপর যেকোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়া যায়। তাই মামুনুলের স্ত্রীকে মিথ্যা বলার কোন কারণ নেই। চতুর্থত, সাংবাদিকদের জেরার মুখে মামুনুল বলেছিলেন, তার সাথে থাকা নারী তার বিবাহিত দ্বিতীয় স্ত্রী। কিন্তু আজও ওই কথিত বিয়ের কাবিননামা দেখাতে পারেননি। পঞ্চমত, ঘটনার পরবর্তী সময়ে ওই নারী টেলিফোনে মামুনুল হকের এক লোকের কাছে বার বার জিজ্ঞেস করছিল, বিয়ের স্থান ও তারিখ সম্পর্কে কেউ জিজ্ঞেস করলে সে কী উত্তর দেবে। ওই নারীকে মামুনুল বিয়ে করে থাকলে সে সহজেই এই তথ্য দিতে পারতো। এই তথ্য জানার জন্য তৃতীয় ব্যক্তিকে তার জিজ্ঞেস করতে হতো না। ষষ্ঠত, ওই নারীর নিজের ছেলে এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে মামুনুলের ব্যভিচারের ঘটনাসমূহ প্রকাশ করে এবং রাষ্ট্রের কাছে মামুনুলের বিচার দাবি করে।
এটি লক্ষণীয়, ধর্ম ব্যবসায়ী মামুনুল যা যা বলেছেন এবং যা যা করেছেন, তার প্রত্যেকটিই ইসলামিক আইন এমনকি বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী অপরাধমূলক কাজ। কোন কর্তৃপক্ষ কারও কাছে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য জানতে চাইলে সে সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিলে সেটি একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কাউকে মিথ্যা তথ্য দেয়ার জন্য পরামর্শ দিলে সেটিও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তর্কের খাতিরে বলছি (যদিও এটি সত্য নয়), এই ব্যক্তি স্ত্রীকে না জানিয়ে গোপনে স্ত্রীর সম্মতি ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে করে থাকলে সেটিও বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এই সম্পর্কিত আইন The Muslim Family Laws Ordinance, 1961 এর বিধান অনুযায়ী (ধারা ৬) শুধু স্ত্রীর সম্মতি থাকলেই চলবে না; এই আইনের অধীন গঠিত আরবিট্রেশন কাউন্সিলের লিখিত আদেশ ছাড়া বহুবিবাহ করা যায় না। এই আইন লঙ্ঘনের শাস্তি এক বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড।
জাতীয় সংসদে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা যে বক্তব্য রেখেছেন, এই মামুনুল হক ডিজিটাল মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতার বিরুদ্ধে বিশোদগার করেছিলেন। এটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এছাড়া এই ধরনের বক্তব্য বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭৮ এ সংসদ ও সংসদ সদস্যদের বিশেষ অধিকার সম্পর্কিত বিধানের লঙ্ঘন। এই ধরনের কর্মকাণ্ড আমাদের জাতীয় সংসদ এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতার প্রতি অবমাননা, যা দেশের প্রচলিত আইনের আওতায় একটি অপরাধ।
মামুনুল হকের মতো কিছু ব্যক্তি এদেশে কিছু ধর্মভিত্তিক সংগঠন পরিচালনা করে আসছে। এসব সংগঠন বাংলাদেশকে মধ্যযুগে নিয়ে যেতে চায় । বঙ্গবন্ধু কন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্ব, তার নানামুখী সাহসী পদক্ষেপ এবং তার কঠোর পরিশ্রমের কারণে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে গেছে। বাংলাদেশ আজ বিশ্বে এক আদর্শ রাষ্ট্র। এই মধ্যযুগীয় গোষ্ঠী বাংলাদেশের সব অর্জনকে নস্যাৎ করতে চায়। অনেকেই এই ধরনের ব্যক্তিদের ধর্মান্ধ হিসেবে অবিহিত করে। আসলে এরা ধর্মান্ধ নয়। এরা ধর্মের লেবাস পরিহিত চিহ্নিত কিছু অপরাধী; প্রকৃত অর্থে এরা ধর্মবিরোধী। কারণ তাদের প্রতিটি কথায় ও কাজে তারা ধর্মীয় অনুশাসন লঙ্ঘন করছেন। ধর্মকে ব্যবহার করে এ দেশের ধর্মভীরু মানুষকে বোকা বানিয়ে এই অপরাধী চক্র তাদের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষ আইন ব্যবস্থার প্রবর্তন করেছিলেন বলেই মামুনুলরা আজ ইসলামিক শরিয়া আইন অনুযায়ী ব্যভিচারের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড থেকে রক্ষা পাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ সৃষ্টি না করলে আজ পাকিস্তানে প্রচলিত Hudood Ordinance (জিনা অর্ডিন্যান্স) বাংলাদেশে প্রযোজ্য হতো এবং এই শরিয়া আইনের আওতায় জনসম্মুখে পাথর নিক্ষেপ করে মামুনুল হকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হতো। এই কৃতঘ্ন গোষ্ঠী ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে আঘাত করেছে। প্রকৃত অর্থে এই আঘাত হানা হয়েছে বাংলাদেশের ওপর। আজ প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। জাতি এই মধ্যযুগীয় তাণ্ডবের উপযুক্ত জবাব দেবে ইনশাআল্লাহ।
লেখক : তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।